x

Welcome Guest

Login or Register
0 0
Card image cap

Nirmukhosh Sharod 2024/নির্মুখোশ শারদ ১৪৩১

Collected By -

₹240 ₹300

20% off

Description

Publisher: Suprokash/সুপ্রকাশ
Language: Bengali
Binding: Paperback
ISSN:

AVAILABILITY : Out Of Stock

Prices are subjected to change. We will inform you in such cases
Our Shipping Charges
  • Features
  • Reviews(0)
আমাদের শারদকথা
...............................
শরতের শুভ্র ও সঞ্চরমান মেঘ, বর্ষণক্ষান্ত দু-কূলছোঁয়া নদীতে মন্দগামী নৌকার স্পর্শে কম্পমান জলরেখায় অবিরত শিকড়স্নাত শীতস্পর্শী অনাসক্ত হাওয়া, নদীতীরে কাশের বন–এমন, এমন একটা ছবি দিয়ে নির্মুখোশের শারদ সংখ্যার ‘পত্রিকার পক্ষ থেকে’ শুরু করতে পারলে শ্রম লাঘব হতো এবং প্রতিক্রিয়াজাত নখর-উৎপীড়নের সম্ভাবনার দায়ও আনুপাতিক হারে হ্রাস পেত।
কিন্তু এই নদী তো শরৎকাল নিয়ে রচনা লেখার দিনের নদী নয়।
পৃথিবীর প্রাচীন হিমবাহগুলি দ্রুত গলে যাচ্ছে, দুর্বিনীত উষ্ণতায় এতকালের এত মানুষের শ্রমের ঘাম নুন হয়ে মিশছে জলে।
শেষ-বর্ষায় রামধনু সমেত শরতের পেঁজা মেঘ লুঠ হয়ে গেছে প্রলম্বিত বজ্রপাতের ঝাঁঝালো  শাসনে। 
নদীতে বাঁধাল। মাছেরা প্রজন্ম হতে প্রজন্মান্তরের কাটাকুটিতে বিষ খেয়ে বাঁধা পড়েছে বাঁধালের দৃশ্যাতীত কৃষ্ণ তরলে। নৌকাগুলো কালভার্টে পথহারা।
নদীতীরে ভিড় করে আসা ব্যাপারীদের মুখে হাসি নেই, বিড়ির ধোঁয়ায় নেই আবেগের উড়াল। দুশ্চিন্তার প্রস্তর-তরঙ্গে পারস্পরিক অকারণ ঔদ্ধত্যের কঠিনতা। পণ্যাগারের আগুনের রাজ্য তাদের গন্তব্য-সীমানা। শরতের ছুটির দিন, উৎসবের মেলা যত এগিয়ে আসে ততই বিপণিরা ঘিরে আসে আমাদের। অগ্নিস্তম্ভ তার অন্তহীন শিখা বিস্তার করতে চায়। অথচ কী তীব্র আলোকপ্রযুক্তির দ্বারা চমকিত বিশ্বগ্রামের বিপণিব্যাপী মুনাফার অন্ধকার!
অকারণ নিস্পৃহ কুটিলতায় খণ্ড-সময় ফিরে তাকায় জুরাসিক যুগের দিকে!
ধ্বস্ত ইতিহাসে হৃত-বোধের মহামারি।
তবু আত্মক্ষয়ী স্বার্থসংঘাতের, লাভালাভের পছন্দসই বিনিময়ের মধ্যেই কখন যেন জেগে ওঠে সময়ের বিষাণ। হননের লোমশ ক্ষুধাতুর হাতের নখরাঘাত, অসময়ে রক্তস্রোত, অত্যাচারের ভীিতছড়ানো বিকৃত-হুংকার, ক্ষমতার ভাষাকে অগ্রাহ্য করে, সমস্ত কলা ও কৌশলকে হেলায় ছুঁড়ে ফেলে কখন যেন সময় ঘুরে দাঁড়ায়— জেগে ওঠে প্রবলতর মানব কণ্ঠ।
তখনই দারুণ অশান্তির নিকষ-রাতের প্রহরে কালের সারথিরা মন্ত্রোচ্চারণের মতোই দীপদণ্ডের আলো ছড়িয়ে দেন চরাচরে–‘ভয় না-পেলে জীবন কত সুন্দর ও উপভোগ্য সেজন্য প্রয়োজন শুধু সাহস, বিকল্পনা এবং একটু সাগ্রহ সম্পৃক্ততার।’ (ভাবানুবাদ ॥ চার্লি চ্যাপলিন : লাইমলাইট, ১৯৫২)
এই ক্ষণে আমাদের সম্পৃক্তির, আমাদের বেঁচে থাকার, আমাদের সৃজনের, আমাদের যাবতীয় অভীপ্সার আলো প্রজ্জ্বলিত হলো এই শারদ সংখ্যায়।
আমাদের পাঠক জানেন, প্রতি বছরই এক একটি বিষয়কে কেন্দ্রে রেখে আমরা পরিক্রমা করতে চাই বাঙালি-সমাজীবনকে। এবারের শারদ সংখ্যার বিশেষ ক্রোড়পত্রের অভিকেন্দ্র ‘বাংলার হারিয়ে যাওয়া সিনেমা হল।’
সিনেমা বা ছায়াছবিকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিনোদন এবং কখনও কখনও বুদ্ধিচর্চার অংশ বা উপাদান হিসেবে দেখা হয়েছে। অবশ্য সমাজতাত্ত্বিক ও ইতিহাস লেখকেরা সিনেমা নামক দৃশ্য-(এবং সবাক চলচ্চিত্রের যুগের সূচনার পর) শ্রব্য মাধ্যমটিকে সমাজ-ইতিহাসের খুবই প্রত্যক্ষ উপকরণ হিসেবে গ্রাহ্য করে এসেছেন।  
অন্যদিকে সিনেমা হলকে সাধারণভাবে বিনোদন-বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে, একমাত্রিক দৃষ্টিতে দেখা হয়েছে। কিন্তু এই সংকলনের পরিকল্পনাকালে আমরা ছায়াছবির নির্মাণ ও উপভোক্তাদের কাছে তা প্রদর্শনের শেষ স্তম্ভ সিনেমা হলের মধ্যবর্তী অংশে থাকা ডিস্ট্রিবিউশন সংস্থার কর্মী থেকে শুরু করে সিনেমা হলের বিচিত্র কর্মীবাহিনীর শ্রমের পরিসরটিকেও মনে রেখেছি।
চলচ্চিত্র নির্মাণ তো এক বহুস্তরিক লগ্নির ফল, তৈরি সিনেমার দর্শকগ্রাহ্যতা তার ফলশ্রুতি। তারপর তার বিনোদনমূল্য আর সমাজমূল্যের বিচার। কিন্তু এর সব স্তরেই ভিন্ন ভিন্ন পুঁজির লগ্নি ও দায়। অবশ্যই প্রযোজকের লগ্নি আর হল মালিকদের লগ্নির চরিত্র ও ক্রিয়াগত ভিন্নতা আছে। সমগ্র প্রক্রিয়াটিতে এই লগ্নি আর মানসিক ও কায়িক শ্রমদানকারী বিরাট-সংখ্যক মানুষের সঙ্গে শেষধাপে ছিলেন হলের কর্মীরা। এবং এই হলগুলিই সিনেমা-নামক শিল্পমাধ্যমটিকে একেবারে স্থানলগ্ন প্রতিবেশীর মতো জনতার কাছে নিয়ে যেতো। সিনেমা হলকে কেন্দ্র করে একদল মানুষের পেশাগত আশ্রয় ছাড়াও সমাজজনের কাছে সিনেমার বিনোদন ও সংস্কৃতির বিনিময়যোগ্য উপভোগ্যতার অনেক বেশি বাস্তবতা ছিল। সিনেমা হলগুলির বিলুপ্তির ফলে বৃত্তি-মানচিত্রের পরিবর্তন ছাড়াও জনযাপনের বৃত্তটিতে যে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে, সেই পরিবর্তনের ইতিবৃত্তটিও সংকলনের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে বিবেচ্য।  
সিনেমা হল নেই। কিন্তু সিনেমায় ‘পুঁজির লগ্নি আর মুনাফা’র পরিমাণ উচ্চারণ করলে ঠোঁট পুড়ে যেতে পারে! তবু আমরা এই সংকলনের অভিকেন্দ্রটির রচনা থেকে রচনান্তরে সেই শ্রমসাধ্য ইতিহাস এবং সিনেমা আর সিনেমা হলগুলিকে কেন্দ্র করে যাপনবৃত্তের সেই দিনগুলির কথা বলতে চেয়েছি। অর্থের আস্ফালন যে ইতিহাসকে বদলে দিতে চেয়েছে আমরা সেই চলচ্চিত্র নামক বিশাল এক কর্মকাণ্ড, পুঁজি নিয়ন্ত্রিত বৃহৎ আড়ম্বরের আড়ালে থেকে যাওয়া ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অথচ অস্তিত্বকণার পরিচয়বাহী ইতিহাসকেই লিপিবদ্ধ করতে চেয়েছি। তাই আমাদের এই শারদ সংখ্যার ক্রোড়পত্র ‘বাংলার হারিয়ে যাওয়া সিনেমা হল’-এর জন্য শোকগাথা নয়।

Customers' review

5 Star
0%
50
4 Star
0%
50
3 Star
0%
50
2 Star
0%
50
1 Star
0%
50

Reviews

Be the first to review ""