পূর্ব পাকিস্তানের এক তরুণী আর সেখান থেকে এপারে চলে আসা তার সহপাঠী বন্ধুর পরস্পরকে লেখা চিঠি এক সময় সারি বেঁধে সীমানার এপার ওপার করছিল। তারপর শুঁয়োপোকা প্রজাপতি হলো, পূর্ব পাকিস্তান বাংলাদেশ হলো আর সেই চিঠিদের ভাষা থেকে বন্ধুতার খুনসুটি উবে গিয়ে তা অনুরাগের গাঢ় ছোপে রঞ্জিত হলো। ওপার থেকে এপারে এসে তরুণী ঘর বাঁধল সেই তরুণের সঙ্গে।
অর্ধ শতক পের হয়ে ফের যখন একলা হলেন সেই একদা-তরুণী, তখন সেই তরুণ বেলার চিঠির ঝাঁক হারিয়ে গেছে ব্যস্ত সংসারের গলিঘুঁজিতে। তিনি শেষবারের মতো চিঠি লিখতে বসলেন অন্য ভুবনে চলে যাওয়া তাঁর জীবনসঙ্গীকে। তাঁর কলমের কালিতে এখন বিগত সময়ের নির্যাস। তিনি জানেন পাশের শয্যা থেকে উঠে গেলেও তাঁর সঙ্গীর পরিত্রাণ নেই অগণিত পাঠকের বিষাদবৃক্ষ থেকে; তাদের সিদ্ধিগঞ্জের মোকামেই যে তিনি লিখে গেছেন তাঁর শেষ ঠিকানা।
এই গ্রন্থ প্রয়াত মিহির সেনগুপ্তকে লেখা, সন্ধ্যা রায় সেনগুপ্তের শেষ চিঠি যা তিনি তুলে দিতে চান মিহিরের মোকামের সব পাঠকের হাতে।
এই গ্রন্থে কেবলই দুটি হৃদয়ের কথা নেই, আছে সীমান্তপারের এক উপপ্লবের কথা, আছে এক অস্থির ও নিষ্ঠুর সময়ের বৃত্তান্ত; আর আছে এক দেশান্তরী পরিবারের কঠিন সংগ্রাম-সংকল্পের রাশিচিহ্ন। সর্বোপরি আছে পরিবারের সব মানুষকে একই ছাদের তলায় এনেও সময়ের প্রতিকূল স্রোতে ধরে না রাখতে পারার বেদনায় দীর্ণ এক মানুষের শেষের অসহায় দিনগুলির বিষাদকথা।
Customers' review
Reviews
Be the first to review ""