তাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এই মাটির রাস্তাটার ডানদিকের জমিটা একটু উঁচু, পাহাড়ে যেমন হয়, সব জায়গাই তো ঢালু, একদিকে উঁচু আরেকদিকটা নীচে চলে গিয়েছে। সেই উঁচুর ওপর ঘাসপালার মধ্যে আছে একটা বড়ো নাসপাতি গাছ। গরমকালে এক একদিন পাকা হলদেটে রঙের নাসপাতি পড়ে থাকে গাছতলায়। কুড়িয়ে নিয়ে না ধুয়েই কামড় লাগায় তারা, সে আর বোন। ধোবে আর কোথায়? খালি দেখে নেয় পোকায় কাটা আছে কিনা। কামড় দিলেই রসে মুখের ভেতরটা ভরে যায়। আরো কিছুটা এগোলে গাছপালা ঝোপঝাড়ের পেছনে একটু ওপরে দেখা যায় সেই বাড়ির পেছনের দেওয়ালটা যে বাড়ির মহিলাকে মা ‘আম্মি’ বলে। আর বাঁদিকে মানে যেদিকটা ঢালু হয়ে ইলি-দের বাড়ি, তার ওপরের ধাপে রাগী মেমদের বাড়ি- সেখানটা সারাবছর অমনিই থাকে। শুকনো ঘাসে ঢাকা মাটির দুটো ধাপ। কখনো সখনো তারা একটু নামে খেলা করার জন্য কিংবা শরতকালের সময় বুনোফুল তোলার জন্য। খুব ফুল হয় ওখানটাতে। এমনি সময়ে তারাফুল, কসমস, সেই যে খুব ছোট্ট পদ্মফুলের মত দেখতে গোলাপি ফুলগুলো, অনেক ফার্ন। শীতের শুরুতে গাঢ় বেগুনির মধ্যে একটু সাদা দাগ দেওয়া কার্পেট ফুল মাটিটা একেবারে ঢাকা দিয়ে দেয়। কিন্তু শীত যখন খুব বেড়ে যায়, সকালে সামনে দূরের পাহাড়গুলোর মাথায় রোজ নতুন নতুন জায়গায় উঁচু হয়ে থাকা বরফ দেখা যায় আর কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায় সারাদিন, কোনো কোনো সময় সারারাতও, সেইসব সময়ে বাঁদিকের এই নীচু জায়গাটা হলুদরঙের বুনো সূর্যমুখী ফুলে একেবারে ভরে যায়। সেটা এত অপূর্ব দেখতে যে ভাবা যায় না। মাটির রাস্তাটাতে ওই সূর্যমুখীগুলোর পরই আছে একটা প্রকান্ড ফার গাছ। তার নীচটা দিনের বেলাতেও অন্ধকার। ওর কোটরের মধ্যে ঝিঁঝিঁপোকা আছে।
Customers' review
Reviews
Be the first to review ""