একরৈখিক অর্থে পেশা হলো জীবনধারণের উপাদান-সংগ্রহকারী, বৃত্তিপ্রদায়ী, উৎপাদন-ক্ষমতাসম্পন্ন কর্মবুদ্ধি ও কায়িক-শ্রমকেন্দ্রিক একটা ব্যাপার। তার সঙ্গে দুবেলা দু-থালা ভাতের সম্বন্ধ অতি-ঘনিষ্ঠ। দীর্ঘদিন স্থায়ী কোনো ধারণাকে যদি আমরা ধ্রুপদী বলি, তাহলে পেশা ও বৃত্তি-সম্পর্কে ধ্রুপদী ধারণা ছিল এই যে : যে-কোনো পেশার লক্ষ্যের প্রাথমিকতা আহার্য ও জীবনযাপনের উপায় হলেও তার প্রকৃত লক্ষ্যের নিষ্পন্নতা িনছক উপযোগিতার থেকে অধিক-কিছু। এতকাল পেশা ছিল তাই-ই যা প্রকৃত-অর্থে কৌমজীবনের সঙ্গে যুক্ত, যা কৌলিক-পরিচয়ের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী, যা পরিবার-প্রতিবেশ বা সামাজিক অবস্থানসূত্রে দীর্ঘায়িত প্রশিক্ষণ এবং আনুষ্ঠািনক যোগ্যতা সাপেক্ষ। দীর্ঘ-প্রশিক্ষণ, নিবিড় অনুশীলন কৌলিকতার প্রচলিত-বৃত্ত অতিক্রমের শক্তি ও সুযোগ তৈরি করত।
অপরপক্ষে পেশা বরাবরই শ্রমের সঙ্গে বিনিময়যোগ্য। ফলত অর্থ, অর্থলগ্ন সম্পদ ও অর্থকেন্দ্রিক ক্ষমতা সবকিছুর সঙ্গে শ্রমেরও যখন বিনিময়মাধ্যম, তখন শ্রমের বাজার ও শ্রমের চাহিদার যারা নিয়ন্ত্রক, তাদের ইচ্ছা এবং প্রয়োজন-অনুযায়ী কৌলিক পেশার কালক্রমিক বিপন্নতা অবশ্যম্ভাবী। সেই বিপন্নতার চেহারাটিকেই আমাদের এই সংকলন সকারণ-সহমর্মিতার সঙ্গে দেখতে চেয়েছে। বিপরীতপক্ষে স্মৃতির পেশাকে ভরকেন্দ্রে রেখে এই সুযোগে এই বই পরিক্রমা করেছে এক দীর্ঘ সময়ের বাঙালি সমাজজীবনকে।
Customers' review
Reviews
Be the first to review ""