বাংলাদেশের ফরিদপুরের সুরেশ্বর গ্রাম থেকে সুরেশ্বরী সরার উৎপত্তি ও বিস্তার। গঠনরীতি ও অঙ্কনরীতিতে কিছুটা ফরিদপুরের সরার মতো। সরার বহির্বদ্ধনী লাল ও সবুজ রঙের হয়। মাঝে সরু কালোর বন্ধনী দেওয়া হয়। সরার মধ্যে দুর্গার পরিবারের পিছনে চালচিত্রের মতো চালা আঁকা হয়। এই সরার কম্পোজিশনের সঙ্গে বাংলার দশাবতার তাসের সাদৃশ্য রয়েছে। রঙের বিন্যাসও বাংলার দশাবতার তাসের মতো। আবার রেখাঙ্কন যদি দেখা যায়, তাহলে উড়িষ্যার রঘুরাজপুরের পটচিত্রের মতো। মাঝে দুর্গার দাঁড়ানোর ভঙ্গিটি পুরোনো খাস বাংলা পদ্ধতির মতো।
অন্যদিকে সুরেশ্বরী সরার রেখাঙ্কনের নমনীয়তা নেপালের বৌদ্ধপট বা ম্যানাস্ক্রিপটে বর্ণিত দেব-দেবীর রেখাঙ্কনের নমনীয়তা ও দীর্ঘতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। কারণটা হলো, ফরিদপুর, ঢাকা, সুরেশ্বর ইত্যাদি জায়গাগুলি পাহাড়পুর বা সোমপুর বৌদ্ধবিহারের খুব কাছাকাছি। বস্তুত সহজযান ও বজ্রযানের যে ভাগটি বাংলায় বৈষ্ণবদের সাথে থেকে গেল, তাদের উত্তরসূরী এই সমস্ত শিল্পীরা। সরার যে রঙের প্রক্রিয়াকরণ, তার সঙ্গে নেপালের থাঙ্কা পেন্টিং-এর সাদৃশ্য রয়েছে। সেখানেও সরার মতো ভূমিজ ও খনিজ রঙের ব্যবহার রয়েছে। এই সরার পট বিভাজনেও নেপালের থাঙ্কা পেন্টিং-এ বর্ণিত তন্ত্র-ছকের প্রভাব পাওয়া যায়।"
সুপ্রকাশ অঞ্চলচর্চা গ্রন্থমালা ৪
বাংলার সরা
দীপঙ্কর পাড়ুই
Customers' review
Reviews
Be the first to review ""