₹225 ₹250
10% off
Publisher- Khoai Publishing House
Writer- Deb Senapati Nandi
Language- Benagli
Binding-Hardbound
পূবের আকাশের দিকে কিয়ৎক্ষণ তাকালেন ভবানী, মিশমিশে কালো অন্ধকার আকাশের বুক থেকে একটি একটি করে নক্ষত্র অস্পষ্ট হয়ে মুছে আসছে। গাঢ় কালো রঙ ঘোলাটে হয়ে লালচে আভার স্পর্শ পূর্বাকাশে। যেন ওই আকাশের কপালে কেউ রক্তচন্দনের টিকা এঁকে দিয়েছে; একটু পরেই ওই পথে সাত অশ্বের রথে চড়ে বিজয়যাত্রায় বের হবেন দিবাকর। ভবানী গুহার বাইরের একটা চওড়া পাথরের ওপর বসে ওই আকাশের দিকে চোখ রেখে খানিক নিজের মনেই যেন বলে উঠলেন, "ওই আকাশটা দেখছো রঙ্গরাজ? চারিপাশে ঘন অন্ধকার, একফোঁটা আলোর রেখা অব্ধি নেই, তবু তারই মাঝে ওই একবিন্দু লাল বিজয়তিলক; ওও তো মিথ্যে নয়। সর্দার; ওই একবিন্দু লালরঙ উজ্জ্বল হয়ে ছড়িয়ে যেতে যেতে একসময় গোটা আকাশটা আলোয় আলো হয়ে যাবে! আর তিলমাত্র অন্ধকার থাকবেনা। ঠিক সেভাবেই আজ আমরা মাত্র কয়েকজন এই লড়াইটা শুরু করেছি! কিন্তু দেখো; একদিন এই বিদ্রোহ বাংলা বিহার উড়িষ্যার গণ্ডি ছাড়িয়ে গোটা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে যাবে। আমার এই দুখিনী দেশমায়ের জীর্ণ হতদরিদ্র ঘরে ঘরে একেকজন মজনু; একেকজন ভবানী; একেকজন রঙ্গরাজ তৈরি হবে। সেদিন ওই আকাশটার মতই আর কোনো অন্ধকার থাকবেনা হে সর্দার! আমার শুভঙ্করী দেশমাতৃকা ভয়ঙ্করী হয়ে দশহাতে দশ অস্ত্র ধরে অসুরদলন করবে।'' রঙ্গরাজের হাতের মশালের গাঢ় হলুদ আলো হু হু করে কাঁপছে ভবানীর মুখে; এক অদ্ভুত আলো অন্ধকার খেলা করছে সেই কঠিন মুখে। ছাইচাপা আগুনের মত দুই চোখে মশালের শিখাগুলোর প্রতিচ্ছবি ধিক ধিক করছে! রঙ্গরাজ হাহাকারের স্বরে বললো, "আর কবে ঠাকুর? এভাবে আমরা কয়েকজন বছরের পর বছর লোকচক্ষুর অন্তরালে লুকিয়ে থেকে কিভাবে পরিবর্তন আনবো? আর এই দেশের মায়েরা? হা হা! হাসালেন ঠাকুর! তারা প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে ঘরে বাইরে নির্যাতিতা হচ্ছে, সংসারে তো বটেই; এছাড়াও যবন, ইংরেজ, মগ আরাকান হার্মাদ শয়তানেরা সুযোগ পেলেই তাদের তুলে নিয়ে যায়! বলপূর্বক ছিঁড়ে খায়, কলমা পড়িয়ে নিকাহ করে, সুদূর মরুভূমির দেশের যবনদের হাতে বিক্রি করে, আরও কত কিছু!!
দেবসেনাপতি নন্দী রচিত "ইতি ভবানী পাঠক" পাওয়া যাচ্ছে অনলাইন ও অফলাইন সর্বত্র।
Publisher- Khoai Publishing House
Writer- Deb Senapati Nandi
Language- Benagli
Binding-Hardbound
পূবের আকাশের দিকে কিয়ৎক্ষণ তাকালেন ভবানী, মিশমিশে কালো অন্ধকার আকাশের বুক থেকে একটি একটি করে নক্ষত্র অস্পষ্ট হয়ে মুছে আসছে। গাঢ় কালো রঙ ঘোলাটে হয়ে লালচে আভার স্পর্শ পূর্বাকাশে। যেন ওই আকাশের কপালে কেউ রক্তচন্দনের টিকা এঁকে দিয়েছে; একটু পরেই ওই পথে সাত অশ্বের রথে চড়ে বিজয়যাত্রায় বের হবেন দিবাকর। ভবানী গুহার বাইরের একটা চওড়া পাথরের ওপর বসে ওই আকাশের দিকে চোখ রেখে খানিক নিজের মনেই যেন বলে উঠলেন, "ওই আকাশটা দেখছো রঙ্গরাজ? চারিপাশে ঘন অন্ধকার, একফোঁটা আলোর রেখা অব্ধি নেই, তবু তারই মাঝে ওই একবিন্দু লাল বিজয়তিলক; ওও তো মিথ্যে নয়। সর্দার; ওই একবিন্দু লালরঙ উজ্জ্বল হয়ে ছড়িয়ে যেতে যেতে একসময় গোটা আকাশটা আলোয় আলো হয়ে যাবে! আর তিলমাত্র অন্ধকার থাকবেনা। ঠিক সেভাবেই আজ আমরা মাত্র কয়েকজন এই লড়াইটা শুরু করেছি! কিন্তু দেখো; একদিন এই বিদ্রোহ বাংলা বিহার উড়িষ্যার গণ্ডি ছাড়িয়ে গোটা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে যাবে। আমার এই দুখিনী দেশমায়ের জীর্ণ হতদরিদ্র ঘরে ঘরে একেকজন মজনু; একেকজন ভবানী; একেকজন রঙ্গরাজ তৈরি হবে। সেদিন ওই আকাশটার মতই আর কোনো অন্ধকার থাকবেনা হে সর্দার! আমার শুভঙ্করী দেশমাতৃকা ভয়ঙ্করী হয়ে দশহাতে দশ অস্ত্র ধরে অসুরদলন করবে।'' রঙ্গরাজের হাতের মশালের গাঢ় হলুদ আলো হু হু করে কাঁপছে ভবানীর মুখে; এক অদ্ভুত আলো অন্ধকার খেলা করছে সেই কঠিন মুখে। ছাইচাপা আগুনের মত দুই চোখে মশালের শিখাগুলোর প্রতিচ্ছবি ধিক ধিক করছে! রঙ্গরাজ হাহাকারের স্বরে বললো, "আর কবে ঠাকুর? এভাবে আমরা কয়েকজন বছরের পর বছর লোকচক্ষুর অন্তরালে লুকিয়ে থেকে কিভাবে পরিবর্তন আনবো? আর এই দেশের মায়েরা? হা হা! হাসালেন ঠাকুর! তারা প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে ঘরে বাইরে নির্যাতিতা হচ্ছে, সংসারে তো বটেই; এছাড়াও যবন, ইংরেজ, মগ আরাকান হার্মাদ শয়তানেরা সুযোগ পেলেই তাদের তুলে নিয়ে যায়! বলপূর্বক ছিঁড়ে খায়, কলমা পড়িয়ে নিকাহ করে, সুদূর মরুভূমির দেশের যবনদের হাতে বিক্রি করে, আরও কত কিছু!!
দেবসেনাপতি নন্দী রচিত "ইতি ভবানী পাঠক" পাওয়া যাচ্ছে অনলাইন ও অফলাইন সর্বত্র।